প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০

প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০

উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রবন্ধাবলি

উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

লোকগীতির সমাজতত্ত্ব

  • ড. আবদুল ওয়াহাব
  • Authors Email:
  • Date of submission :
  • Date of Acceptance :

প্রবন্ধাবলি

প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০
DOI:
ISSN:

  • Page No : 33-56

সারসংক্ষেপ

[সঙ্গীত এবং সুর সংস্কৃতির অন্যতম মৌল উপাদান। সমাজের উত্থান-পতনের টানাপোড়েনে সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সঙ্গীতের সৃষ্টি ও পরিপুষ্টি হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সবুজ শ্যামল বাঙলার প্রকৃতি, নদীমাতৃকতা, বন-বনানী, পাহাড়-পর্বত, হাওড়-বিল নিয়ত পরিবর্তনশীল প্রাকৃতিক পরিবেশপরিমন্ডল, ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যতা দেশের মানুষের উপর যে প্রভাব ফেলেছে তারই প্রতিফলন ঘটেছে এদেশের সঙ্গীত তথা বিচিত্র প্রকৃতির লোকগীতিতে। বাংলাদেশের সঙ্গীতের নিজস্ব ঐতিহ্য এদেশের লোকগীতি। প্রাগৈতিহাসকাল থেকে এ ঐতিহ্য চলে এসেছে। লোকগীতির উৎপত্তির ক্ষেত্রে একটি সংহত সমাজ ক্রিয়াশীল যে সমাজে শ্রেণীদ্বন্দ্ব বিদ্যমান; এমন একটি সুসংহত ও বিকাশমান সমাজেই লোকগীতির উৎপত্তি ঘটে। লোকগীতি সৃষ্টির মূলে রয়েছে স্ব স্ব ক্ষেত্রে কর্মজীবী মানুষ-রয়েছে কামার-কুমার, তাঁতি-ধোপা, জেলে-মাঝি, কৃষক, গাড়োয়ান। তাই লোকগীতিতে তাদের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে। ফুটে উঠেছে সমাজকাঠামোর বা মানুষের পারস্পারিক সম্পর্কের স্বরূপ। সমাজবিজ্ঞানের দায়িত্ব সমাজ কাঠামোর মূল্যায়ন, সমাজের বিকাশ, বিবর্তন ও সংস্কৃতির ইতিহাস বিশ্লেষণ। যুগে যুগে সঙ্গীত তথা শিল্পকর্মে সমকালীন সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেক ঐতিহাসিক যুগেরই শিল্পকর্মে সে যুগের চরিত্র-বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। বন্য যুগ, পশু পালন ও যাযাবর যুগ, দাসযুগ, সামন্ত বা মধ্যযুগীয় কাল থেকে আজ পর্যন্ত শিল্পকর্মে ধারাবাহিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে তা থেকে সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে সাথে সঙ্গীতের সামাজিক দায়বদ্ধতা বা গণচেতনার স্বরূপটি প্রকাশ হয়। লোকগীতিতে সমাজজীবনের প্রকাশ ঘটে কখনো স্পষ্ট, কখনো রূপকের অন্তরালে কিংবা তত্ত্বের ছদ্মবেশে। বিশুদ্ধ শিল্প-প্রেরণার কিংবা নিছক সৌন্দর্য সৃষ্টির কারণে লোকগীতির জন্ম নয়। এর পশ্চাতে রয়েছে মানবতাবাদী ভাবনা, জীবন-অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতাবোধ। সঙ্গীতের সমাজতত্ত্বের ক্ষেত্রে গানের "জন্ম এবং পুন:জন্মের" বিষয়টি বিচার্য। একটি সঙ্গীত কালের চিত্র বুকে ধারণ করে বয়ে চলে কাল থেকে কালান্তরে। পুনঃসৃষ্টির প্রক্রিয়ায় কোনো শিল্পী যখন উপযুক্ত স্থান-কালের মধ্যে দাঁড়িয়ে তার গানে 'আপন মনের মাধুরী' সংযোজিত করতে পারে, তখন সেই গান নিছক বক্তব্য বিষয়ের সীমাকে অতিক্রম করে যায়, তাতে সংযোজিত হয় নতুন মাত্রা। এভাবেসঙ্গীত রচনাকার, সুরকার এবং কালেকালে এর পরিবেশনের, উপস্থাপনের বিভিন্নতার মধ্য দিয়ে সঙ্গীত সমাজ কাঠামোকে বিশ্লেষণের সুযোগ এনে দেয়। বর্তমান নিবন্ধে বাঙলার লোকগীতিতে সমাজ কাঠামোর স্বরূপ বিশ্লেষণের প্রয়াস নেয়া হয়েছে।!

মূল শব্দ:


Leave a Comment