প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দিনাজপুরের সাঁওতালদের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন : একটি সমাজতাত্ত্বিক সমীক্ষা
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য দিনাজপুরের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের প্রথাগত আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা। পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রভাব, নগরায়ন, আধুনিকায়ন, খ্রিষ্টান মিশনারীদের প্রভাব সহ যে সব নিয়ামকগুলো কাজ করছে তা সমাজতাত্ত্বিকভাবে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা। বাংলাদেশ একটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দেশ। এদেশে প্রায় ৩১ টি নৃ-গোষ্ঠীর (এথনিক গ্রুপ) বসবাস। এ নৃ- গোষ্ঠীরা তাদের স্বতন্ত্র এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক জীবনের ধারক। বাংলাদেশে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চাকমাদের পরেই সাঁওতালদের অবস্থান। উত্তরবঙ্গে অবস্থানরত নৃ-গোষ্ঠীগুেলোর মধ্যে সাঁওতালরা সংখ্যাগরিষ্ট। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, বগুড়া,ঠাকুরগাঁও ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাঁওতালদের দেখা যায়। তবে তারা মূলত রাজশাহী এবং দিনাজপুরেই কেন্দ্রীভূত। বিগত কয়েক দশকে খ্রিষ্টান, হিন্দু এবং ইসলাম ধর্মের প্রভাব নগরায়ন ও শিল্পায়নের প্রভাব এবং বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কারণে তাদের প্রথাগত জীবনে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। এ পরিবর্তন তাদের আর্থ-সামাজিক জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। দিনাজপুর জেলায় বসবাসরত সাঁওতালরা বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাবমুক্ত নয়। হিন্দু-ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্ম, নগরায়ন এবং শিল্পায়ন তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। আলোচ্য প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য দিনাজপুরের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনকে সমাজতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা। বিশেষ করে পরিবর্তনের নিয়ামকগুলো তুলে ধরা। পাশাপাশি পরিবর্তনের ফলে তাদের যে বর্তমান অবস্থা তাতুলে ধরা। এ পর্যায়ে মাঠ কর্মের ক্ষেত্র হিসাবে দিনাজপুর জেলার তিনটি সাঁওতাল অধ্যুষিত গ্রামকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে পার্বতীপুর থানার চন্দ্রপুর ও উভয় বাসুদেবপুর এবং চিরিবন্দর থানার রাজাপুর যেখানে মাঠ পর্যায়ে এ সমাজতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তবে, কবে, কখন প্রথম সাঁওতালরা এই উপমহাদেশে এসেছিল সেবিষয়ে নৃ-বিজ্ঞানী এবং সমাজ বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও সকলেই এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেন যে, সুদূর অতীতে সাঁওতালরা বাইরের থেকে এসে ভারতবর্ষে বসতি স্থাপন করে।' দৈহিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সাঁওতালরা আদি অস্ট্রোলয়েড (Proto-Australoid) গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। সাঁওতালদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ডেল্টন বলেন, "Their faces are almost round, checkbones moderately prominent, eyes full and straight, nose generally broad and depressed, mouth large and lip very full and projecting, hair straight and black"