প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলালার ফকীর সন্ন্যাসী বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০): পরিপ্রেক্ষিত ও মতাদর্শ
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৬ আগষ্ট ২০১০
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বৃটিশদের বাংলা দখলের সাথে সাথে দক্ষিণ এশিয়ায় ঔপনিবেশিকরণ শুরু হয়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পুঁজিবাদী ইংরেজ শক্তির জয় লাভের ফলে বাংলার স্বাধীন নবাবীর অবসান ঘটে। নতুন শাসনের চাহিদা মোতাবেক বাংলার সর্বক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন সূচিত হয়। সরকারের পরিবর্তিত নীতির কারণে এদেশের সনাতন শ্রেনীসমূহ বিশেষত ফকীর সন্ন্যাসীশ্রেণী বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ধর্মীয় অনুশাসনের দিক হতে ফকীর সন্ন্যাসীদের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও কালক্রমে উভয়ের মধ্যে আদর্শগত ও সাংস্কৃতির ঐক্য সৃষ্টি হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতনসমূহ ফকীর সন্ন্যাসীদের মধ্যে মিলনের সাধারণ ক্ষেত্র তৈরী করে। একই নেতৃত্বের অধীনে তারা সরকার বিরোধী আন্দোলন পরিচালনা করে। ধর্ম তাদের বিদ্রোহের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অন্তরায় তৈরী করেনি। তাদের আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয় নিঃস্ব কৃষক, তাঁতি, পতিত জমিদার ও মুঘল সরকারের বেকার সৈন্যদল। এই বিদ্রোহ ছিল সরকারের নির্বিচারে শোষণের বিরুদ্ধে প্রথম স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। এই বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে সংশয় আছে। তবে এই বিদ্রোহের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, নেতৃত্ব ও পরামর্শ প্রমাণ করেফকীর সন্ন্যাসীরারাজনীতির পথ পেরিয়ে অর্থনৈতিক ও আদর্শগত মুক্তির প্রত্যাশী ছিল। তারা এদেশের সনাতন প্রথা পুনঃপ্রবর্তন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ফকির সন্ন্যাসীদের নানাবিধ অসুবিধাসমূহ ছিল ইংরেজ শক্তির বিরুদ্ধে তাদের সাফল্যের অন্তরায়। তবে এই বিদ্রোহ ছিল পরবর্তী সময়ের সকল বিদ্রোহের গৌরবময় প্রেরণার উৎস।