
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৮ জুলাই ২০১৬
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সভ্যতার সঙ্কট ও প্রগতির পথ
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৮ জুলাই ২০১৬
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
বিভিন্ন জাতি বিভিন্ন নামে রেনেসাঁসের স্পিরিট অবলম্বন করে স্বতন্ত্রভাবে সভ্যতার ধারা ধরে এগিয়ে চলছিল। এর মধ্যে উনিশ শতকের শেষ দিকে ইউরোপের বৃহৎ শক্তিগুলো আত্মপ্রসারের জন্য জাতীয়তাবাদের নামেসম্প্রসারণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী কর্মনীতি নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতায় মত্ত হয়। সংঘটিত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। তখন ইউরোপের দার্শনিক-বৈজ্ঞানিকদের অনেকে এই ঘটনাবলিকে রেনেসাঁসের অবসান ও সভ্যতার সঙ্কট বলে অভিহিত করেন। সঙ্কটের অবসান ও নতুন সভ্যতা সৃষ্টির জন্য তাঁরা আধুনিক যুগের অন্যায় ও অনাচার দূর করার জন্য নতুন রেনেসাঁস সৃষ্টির প্রয়োজন ব্যাখ্যা করেন। এর পাশাপাশি শ্যবাদ শিল্প-সাহিত্যে দেখা দেয় আধুনিকতাবাদ। আধুনিকতাবাদের মর্মে ছিল চরম নৈরাশ্য ও কলাকৈবল্যবাদ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়। সে সময়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্পসাহিত্যের সকল ক্ষেত্রে দেখা দেয় উত্তরাধুনিকতাবাদ। উত্তরাধুনিকতাবাদের মর্মেআছেশূন্যবাদ। নৈরাশ্যবাদ ও শূন্যবাদ রেনেসাঁস-বিরোধী। আসলেআধুনিকতাবাদ ও উত্তরাধুনিকতাবাদ কোনে ানো ঘোষণা নাদিয়ে সামনে আসে কাউন্টার-রেনেসাঁস রূপে। উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে আত্মপ্রকাশ করেছিল মার্কসবাদ। মার্কসবাদ নতুন বিশ্বব্যব ব্যবস্থার প্রত্যয় ঘোষণা করে সৃষ্টিকরেছিল নতুন আশাবাদ। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপের পর সে আশাবাদ আর টেকেনি। কমিউনিস্ট পার্টির ইশতিহার প্রকাশিত হয় ১৮৪৮ সালে আর সোভিাভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপ ঘটে ১৯৯১ সালে। এরমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও জীবপ্রযুক্তির বিপ্লব এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় অভূতপূভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপের পর বিশ্বব্যবস্থাকে যে ধারায় বিকশিত করা হচ্ছে তাকে কে বলা হচ্ছে বিশ্বায়ন। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, ন্যাটো, জি-সেভেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, স্থা, জাতিসংঘ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে চলেছে বিশ্বায়ন কর্তৃপক্ষ রূপে। প। বিশ্বায়নকে বলা যায় সাম্রাজ্যবাদের উচ্চতর স্তর। এই সময়ে বসনিয়া, হারজেগোবিনা, সার্বিয়া, আফগকগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় চলছেল আগ্রাসী যুদ্ধ। প্রতি বছর লক্ষ লোকের প্রাণ যাচ্ছে। এর প্রতিক্রি ক্রিয়ায় আত্মপ্রকাশ করছে চালেবান, আলকায়দা, আই এস ইত্যাদি। উৎপাদন ও সম্পদ বাড়ছে, বৈষম্য ম্য আগের তুলনায় দ্রুততর গতিতে বাড়ছে, মানুষ অমানবিকৃত হয়ে চলছে। ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯) থেকে রুশ বিপ্লবের বিলোপ (১৯৯১) পর্যন্ত মানবজাতি ছিল পরিবর্তন উন্মুখ। ায় দেখাতে চেষ্টা করা হয়েছে যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যে সভ্যতার সঙ্কট দেখা দিয়েছিল, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় বিকাশে পর আজো মানবনবজাতি সেই সঙ্কটের মধ্য দিয়েই চলছে। এর মধ্যে সঙ্কট কাটাবার কাটাবার প্রচেষ্টা প্রচেষ্ট বার বার মার খেয়ে গেছে। এ প্রবন্ধে সভ্যতার সঙ্কট থেকে উদ্ধার লাভের জন্য নতুন রেনেসাঁস সৃষ্টির যৌক্তিকতা প্রমাণ করা হয়েছে। সকল জাতির রাষ্ট্রব্যবস্থাকে এবং গোটা বিশ্ব বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত ও নবায়িত করার প্রয়োজন ব্যাখ্যা করা হয়েছে। হে চলমান বিশ্বায়নের বর্জনীন কল্যাণের লক্ষ্যে বিশ্বসরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বসর সকার গঠিত হলেও জাতি, জা জাতীয় সরকার, জাতীয় ভাষা,জাতীয় সংস্কৃতি থাকবে। বিশ্বসরকারের কাছে একা সেনাবাহিনী রেখে সকল রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করতে হবে। এতে রেনেসাঁস, সভ্যতা, জাতীয় সংস্কৃতি, প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা পুনর্গঠনের চেষ্টা করা হয়েছে।