প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৩ আগষ্ট ১৯৯২
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় ইতিহাস চর্চা
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৩ আগষ্ট ১৯৯২
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
জাতীয় ইতিহাস প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ স্থানীয় ইতিহাসের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটে জাতীয় ইতিহাসে। তাই স্থানীয় ইতিহাসকে দেশের সার্বিক ইতিহাস চেতনার ভিত্তি বলা হয়ে থাকে। ইদানীং মুক্তিযুদ্ধের লেখালেখির ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধকে প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমান প্রবন্ধের উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ (১) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশেষ করে স্থানীয় ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে যে সকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা; (২) মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর প্রকৃতি ও বিষয়বস্তু মূল্যায়ন; ও (৩) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনার সম্ভাবনাময় দিক তুলে ধরা এবং স্থানীয় তথা জাতীয় ইতিহাস রচনার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোগ নেয় ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমীর "জাতীয় স্বাধীনতা ইতিহাস রচনা পরিষদ"। সবচে বড় ধরনের উদ্যোগ হচ্ছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস লিখন ও মুদ্রণ প্রকল্প।" মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় ইতিহাসের বইগুলোকে পাঁচ ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছেঃ (১) মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় ইতিহাস রচনার প্রয়াস বা মূল্যায়ন; (২) রণাঙ্গন বা সশস্ত্র সংগ্রাম; (৩) অবরুদ্ধ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ; (৪) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ; (৫) দলিলপত্র ও আলোকচিত্র। এসকল শিরোনামভুক্ত প্রায় ১০০ টি বই নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। এ বইগুলো সম্পর্কে চুড়ান্ত মূল্যায়ন হচ্ছে ইতিহাস তত্ত্বের দিক থেকে এ গুলোকে ইতিহাস না বলে ইতিহাসের উপকরণ বলাই শ্রেয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনার জন্যে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেয়া উচিৎ। এরশাদ সরকারের আমলে "বাংলাদেশ ইতিহাস গবেষণা সংস্থা” গঠনের জন্য যে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তা সংশোধিত ও পরিবর্ধিত আকারে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস লিখন ও মুদ্রণ প্রকল্পের সংগৃহীত দলিলপত্রকে কেন্দ্র করে এই স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠিত হতে পারে। তথ্য বিকৃতিযুক্ত ও নিরপেক্ষ এমনি একটি পূর্ণাঙ্গ ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস রচনা হবে এ সংস্থার মুখ্য কাজ।