প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ভারতের সিন্ধুতে ইসলামে ধর্মান্তরকরণের স্বরূপ সন্ধান (৭১০-১১৯২ খ্রীঃ)
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
সপ্তম শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত সিন্ধুর ইতিহাস ছিল অনেকটা কুয়াশাচ্ছন্ন এর কারণ হচ্ছে এ সময়ের হিন্দু ঐতিহাসিকদের উদাসীনতা এবং মুসলিম ঐতিহাসিকদের বিধর্মী বিদ্বেষ।' তথাপিও উভয় শ্রেণীর ঐতিহাসিকদের লিখিত বিবরণ থেকে এ সময়ের সিন্ধুর ইতিহাস সম্পর্কে অস্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব। আরবদের সিন্ধু বিজয়ের একটি প্রাথমিক প্রামাণিক উৎস হল 'চাচনামা'।' এটি সিন্ধু বিজয়ের ভারতীয় কিংবদন্তী। এর রচয়িতা ছিলেন আলি বিন হামিদ বিন আবু বকর কুফী। ১২১৬ খ্রীঃ তিনি যে 'ফতেহনামা' বা বিজয় কাহিনী রচনা কনে, তাই 'চাচনামা' নামে খ্যাত হয়।' সিন্ধুর ইতিহাস রচনায় অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল আহমদ বিন ইয়াহিয়া বিন জাবির আল-বালাযুরী রচিত কিতাব 'ফুতুহুল বুলদান'।' তিনি সমকালীন দলির দস্তাবেজ, চিঠিপত্র এবং অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের আত্মীয় স্বজনদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়ে উক্ত গ্রন্থটি রচনা করেন। সিন্ধুর প্রাচীন ইতিহাস অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ৪৫০-৬৪৩ খ্রীঃ পর্যন্ত সিন্ধুতে রায় (Rai) বংশের শাসন বলবৎ ছিল। এ বংশের শেষ শাসক ছিলেন দ্বিতীয় রায় সাহজি। রায় বংশের পতন হয় চাচদের হাতে। চাচরা ছিলেন ব্রাহ্মণ। রায়দের শাসনে তারা মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চর্চা বংশ ৬৪৪-৭২৪ খ্রীঃ পর্যন্ত সিন্ধু শাসন করেন। এ বংশের তৃতীয় রাজা ছিলেন দাহির (৬৭৯-৭১২)। রাজা দাহিরকে পরাজিত করে মুহাম্মদ বিন কাশিম ৭১২ খ্রীঃ সিন্ধুতে মুসলিম শাসনের সুত্রপাত করেন। এ কথা সত্য যে, মুসলমানদের সিন্ধু আক্রমণ কোন আকস্মিক ঘটনা ছিল না। আরব বাণিজ্য পোতের নিরাপত্তার জন্য দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রাঃ) এর সময় থেকে পরীক্ষামূলক নৌ-অভিযান ভারতীয় উপকুলে পাঠানো হতো। মুহাম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে তা সম্পন্ন হয়।' সিন্ধুর বিখ্যাত নগরসমূহে যেমন, আলোর, ব্রাহ্মণবাদ, মুলতান নিরুন ও রাওরে সেনানিবাস স্থাপন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনে এদেশীয় কর্মচারীদেরকে পুনর্বহাল রাখা হয়।' মুহাম্মদ বিন কাশিম চার বছরের অভিযানে সিন্ধু ও মুলতান জয় করে কনৌজে অভিযান কালে দামেস্কের উমাইয়া খলিফা সোলায়মানের আদেশে ২১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ অনেকটা রহস্যাবৃত। মুহাম্মদ বিন কাশিমের মৃত্যুর ফলে বিজিত স্থানে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। বিজিতরা