প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৩ আগষ্ট ১৯৯২
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংহতির সমস্যা
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৩ আগষ্ট ১৯৯২
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাবর্ত্য জেলাসমূহে বসবাসরত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের পটভূমি ও বিভিন্ন পর্যায় এবং উক্ত স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংহতির ক্ষেত্রে যে সমস্যার জন্য দিয়েছে, তা এ প্রবন্ধে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রবন্ধের ভূমিকায় জাতিগঠন প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয়তার প্রশ্নকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় সংহতির যে সংকট দেখা দিয়েছে তা উল্লেখ করার পর জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অত্র অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর আর্থ- সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় নির্ধারণ সাপেক্ষে বাঙালী জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের স্বাতন্ত্রের প্রশ্নটিও আলোচিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অন্যে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের উত্থাপিত দাবীর একটি ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ঐ অঞ্চলের প্রশাসনিক বিন্যাস ও "আঞ্চলিক স্বাতন্ত্রের" এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে আঞ্চলিক স্বাতন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং বাঙালী জাতীয়তার প্রবল স্রোতের মধ্যে উপজাতীয় সংস্কৃতির আত্মীকরণের সাংবিধানিক-- রাজনৈতিক প্রেক্ষিত স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের ভিত্তি সৃষ্টি করে। আঞ্চলিক স্বাতন্ত্র্য ও উপজাতীয় সংস্কৃতির স্বীকৃতির পক্ষে উত্থাপিত দাবী এবং আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাঙালী বসতি স্থাপনের ফলে সৃষ্ট উপজাতীয় সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা একটি সংগঠিত রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করে, আর প্রত্যুত্তরে সেই রাজনৈতিক আন্দোলন দমনের সরকারী প্রচেষ্টাও বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। এ পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক আন্দোলনের সশস্ত্র চরিত্র এবং সরকারী পর্যায়ের সামরিক পদক্ষেপের পরিধি ও গভীরতা সম্পর্কে আলোচনা করার পর সমস্যা সমাধানের কতিপয় রাজনৈতিক উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
প্রবন্ধের শেষ প্রান্তে উপজাতীয়দের সশস্ত্র আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিরোধ ও গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে আন্দোলনের বর্তমান পর্যায় এবং এর ভবিষ্যৎ পরিণতি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংহতি দৃঢ়করণের প্রয়োজনীয়তার আলোকে উক্ত সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।