প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জালাল উদ্দীন রূমিঃ কবি ও সূফী
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ইরান সূফীবাদের উৎকর্ষতার ক্ষেত্রে এক বিরাট স্থান অধিকার করে আছে। ইসলামী বিশ্বে সূফীবাদের উৎপত্তির ক্ষেত্রে আরবদের বিশেষত মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী ও রাবেয়া বসরী প্রমুখগণের অবদান অনস্বীকার্য। পরবর্তীতে এ মতবাদ ইরানের বাবা তাহের উরইয়ান, শেখ ফরিদুদ্দীন আত্তার, হাফিজ সিরাজী, মাওলানা জালাল উদ্দনি রূমী প্রমুখ সাধকগণের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং ইরান, তুরস্ক ও ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। মরমী কবি মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সূফী সাধকদের অন্যতম। তিনি তাঁর মসনবী সাহিত্যে আধ্যাত্মিক বিষয়াবলী বিভিন্ন উপমা ও রূপকের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন। এই আধ্যাত্মিক দর্শন তাঁর পূর্বের দু'জন বিখ্যাত সুফী কবি হাকিম সানাঈ ও ফরীদ উদ্দীন আত্তারের মাধ্যমে লালিত হয়েছিল। বস্তুতঃ মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী তাঁদের স্তর অতিক্রম করে এ দর্শনকে একটি উন্নত ও বিস্তৃত পরিসরে উন্নীত করতে সক্ষম হন, দার্শনিক কাব্যিক ও সূফীতাত্ত্বিক দিক থেকে যার কোন তুলনা নেই। তাঁর লিখন পদ্ধতি ও বিষয়বস্তু এতই মৌলিক ছিল যে, এটাকে সদ্য উদ্ভাবিত একটি নতুন পদ্ধতি হিসেবেই বিবেচনা করা যায় মাওলানা রূমীর আসল নাম মোহাম্মদ। উপাধি জালাল উদ্দীন। পিতার নাম মোহাম্মদ সুলতান বাহাউদ্দীন ওয়ালাদ। মাওলানার পিতামহের নাম হুসাইন বালখী। রূমীর পিতামহ হুসামুদ্দীনও একজন অতি উচ্চ পর্যায়ের সুফী ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন।' মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সূফী দার্শনিক এই মরমী কবি পারস্যের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত বল্ল শহরে ৬ই রবিউল আউয়াল ৬০৪ হিজরী তথা ১২০৭ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মূলতঃ তিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় পশ্চিম তুরস্কের কুনিয়া শহরে অতিবাহিত করেন বিধায় তিনি 'রূমী' নামে আখ্যায়িত হন। কেননা তৎকালীন যুগে পশ্চিম তুরস্ক মুসলিম বিশ্বে 'রূম' বলেই পরিচিত ছিল। বিখ্যাত ঐতিহাসিক আফলাকী তাঁর 'মানাকিবুল আরেফীন' গ্রন্থের ভূমিকায় রূমীকে 'সিররুল্লাহিল আযম' বা 'মহান আল্লাহর রহস্য' উপাধি দ্বারা ভূষিত করেছেন। উল্লেখ্য যে, রূমীর পূর্ব-পুরুষগণ ইসলামের