প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবন্ধাবলি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ক্রমবিবর্তনে নবোপলীয় প্রযুক্তি: একটি প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যালোচনা
প্রবন্ধাবলি
প্রবন্ধাবলি, খণ্ড: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪
DOI:
ISSN:
সারসংক্ষেপ
সমাজ ক্রমবিকশিত সত্ত্বা। এর পরিক্রমণে অভ্যন্তরীণ রদবদল সংঘটিত হয়। এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উপনীত হবার ক্ষেত্রে পূর্বেকার অবস্থার মধ্যে পরিবর্তনের বীজ সুপ্ত থাকে এবং পরবর্তী স্তরে তারই বিকাশ ঘটে। নৃতত্ত্ব, প্রত্নতত্ত্ব ও সমাজবিজ্ঞানএ সব পাঠক্রমে সমাজের এই বিবর্তন ধারাটি পর্যালোচিত হয়। এর মূল কারণ সমাজকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যার চেষ্টা এবং বিজ্ঞানমনস্ক উপস্থাপন। ক্রমবিকশিত এই সমাজ সত্ত্বার গ্রন্থনায় মনুষ্যশ্রম হলো শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ যা কিনা তারই মস্তিস্কের প্রসারতা ও চিন্তনের প্রায়োগিক অধ্যায়। কৃৎকৌশলগত উন্নয়ন তথা প্রযুক্তিগত জ্ঞানের বিকাশ সমাজ বদলের একটি মৌল নিয়ামক। সমাজ ব্যাখ্যার প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গীর আলোকে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রেও বিষয়টি লক্ষ্যযোগ্য। সমাজের বিবর্তন ব্যাখ্যায় প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গীর যে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয় তাতে নবোপলীয় অধ্যায়কে বিবেচনা করা হয় একটি সামাজিক বিপ্লব তথা প্রচণ্ড অগ্রসরতার অধ্যায় হিসেবে। একটানা সুদীর্ঘকাল পুরোপলীয় স্তর অতিক্রমের পর নবোপলীয় স্তরে সমাজ, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে সাধিত হয়েছে অদ্ভুত সাফল্য। খাদ্য সংগ্রহ অর্থনীতির পর্যায় পেরিয়ে নবোপলীয় যুগে খাদ্য উৎপাদন অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছে। এর সাথে সূচিত হয়েছে সমাজের ভাবাদর্শিক আঙ্গিক, প্রথা ও মূল্যবোধে পরিবর্তনের ধারা। খাদ্য উৎপাদন অর্থনীতি বিকাশের পেছনে কাজ করেছে মানুষের কৃৎকৌশলগত চিন্তন ও এর প্রায়োগিকতায় এক ধাপ সাফল্য যা কিনা মানুষ ও প্রাণীকূলের আবাস অঞ্চলের (habitat) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বৃক্ষরোপণ, পশুপালন, কুটির নির্মাণ সর্বোপরি কৃষিকাজের বিকাশের পেছনে দীর্ঘকাল ধরে মানুষের পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত হয়েছে। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিজ্ঞতাই সমাজের প্রযুক্তিগত দিক যা কিনা ভাবাদর্শিক দিককেও প্রভাবিত করে; সংশ্লিষ্ট করে আবাসভূমিকে। নবোপলীয় স্তরে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনও সূচিত হয়েছে, আর সেই সাথে এর সম্প্রসারণ ঘটেছে পৃথিবীর নানা অঞ্চলে। বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশ তা থেকে যে বাদ পড়েনি তার বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক এই অনুসন্ধান এ অঞ্চলের ঐতিহ্যক মাত্রাকে নিঃসন্দেহে বলীয়ান করেছে। তদুপরি এ অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা অদ্যাবধি পর্যাপ্ততর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে এমনটি বলবার কোন অবকাশ নেই। প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহের পর্যাপ্ত বিশ্লেষণ যেমন জরুরী একই সাথে পরবর্তী খনন ও গবেষণা কাজেরও বিস্তার ঘটা প্রয়োজন। বর্তমান নিবন্ধটি এর একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। বলা যায় এটি শুধু তাগিদবোধ তৈরির একটি প্রসঙ্গ-উল্লেখ