
সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণা পদ্ধতি
উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্ৰ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নে নির্ভরশীলতা তত্ত্বের রূপরেখা
সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণা পদ্ধতি
DOI:
ISSN :
ভূমিকা
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ উত্তরকালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নে একটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। সেটি হলো রাজনীতি থেকে অর্থনীতির বিচ্যুতিকরণ। এই বিচ্যুতির জন্য মূলত দায়ী পশ্চিমা সমাজ বিজ্ঞানের একটি ধারার প্রভাব উদারনীতিবাদ। উদারনীতিবাদীদের মতে অর্থনীতি রাজনীতি দুটি পৃথক ব্যবস্থা নির্ণয় করে। এই চিন্তাই তাদেরকে সপ্তদশ শতাব্দীর মার্কানটেলিস্ট (Mercantilist) ও বিংশ শতাব্দীর মার্কসীয় তাত্ত্বিকদের থেকে স্বতন্ত্র রাখে।'
উদারনীতি তাত্ত্বিকদের মতে যে কোন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি হচ্ছে পণ্য বা সার্ভিসের উৎপাদন, বন্টন ও ভোগ। এই সকল অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া প্রাকৃতিক নিয়ম (Natural Law) দ্বারা পরিচালিত। সুতরাং এই প্রক্রিয়াকে স্বভাবসিদ্ধভাবে চলতে দিলেই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সঙ্গতিপূর্ণ হবে। কোন ধরনের রাষ্ট্রীয় বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তাই হবে অবাঞ্ছিত। তাই এই মতাদর্শ অনুযায়ী অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্ম ব্যক্তিমালিকানার উদ্যোগেই নেয়া উচিত, সরকারী প্রচেষ্টায় নয়। তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যখন সরকার ও রাজনীতির হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি পেয়ে বাণিজ্য প্রসারিত হবে এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে, তখনই সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির সম্ভাবনা উজ্জ্বলতর হবে। এই যুক্তি থেকেই অর্থনীতিবিদরা তাদের অর্থনীতির চর্চায় রাজনীতির প্রবেশদ্বার রুদ্ধ করেছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভাত্ত্বিকরা অর্থনীতির চাইতে রাজনীতির দিকে মনোনিবেশ করেছে বেশী। এর কিছু বাস্তব কারণও ছিল। প্রথমত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের উত্তরকালে ব্রেটন উত্স সম্মেলনে (Breton Woods) পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনে একটি বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠনে মতৈক্য রচিত হয়। উল্লেখযোগ্য যে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সোভিয়েত আধিপত্য বিস্তারের পর, সোভিয়েত কেন্দ্রিক একটি পাল্টা ব্যবস্থা চালু হয়। অপরদিকে তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দুর্বল অবস্থানে বিরাজ করার ফলে, বৃটেন উত্সের বিশ্ব অর্থনীতির ব্যবস্থাকে মেনে নেয়।